জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল দশমী তিথিতেই মর্ত্যে আগমন ঘটে দেবী গঙ্গার। সাগর রাজার সন্তানদের নশ্বর দেহে প্রাণদানের জন্য শ্রী ভগীরথ শ্রীশ্রী গঙ্গাদেবীকে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন ৷ ব্রহ্মার কমণ্ডলু থেকে গঙ্গার সরাসরি মর্ত্যে আগমন ঘটলে প্রলয় ঘটে যাবে ৷ তাই গঙ্গার প্রবল ধারা প্রথমে নিজের জটায় ধারণ করেছিলেন দেবাদিদেব মহাদেব ৷ এরপর সেখান থেকেই স্রোতস্বীনি রূপে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির আশ্রম পর্যন্ত পৌঁছে যান দেবী গঙ্গা ৷ এই উপলক্ষে শুক্লদশমী তিথি পুণ্য গঙ্গা দশহরা হিসাবে পালন করা হয়। এই তিথি উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং বাংলায় বিশেষ ভাবে পালিত হয়।
আগামী ৫ জুন, বাংলার ২১ জ্যৈষ্ঠ বৃহস্পতিবার শ্রীশ্রী গঙ্গা দশহরা। শাস্ত্রমতে, গঙ্গা দশহরা (দশমী) তিথিতে গঙ্গাস্নান করলে দশবিধ পাপ ক্ষয় হয়। এই তিথিতে ভক্তিভরে গঙ্গাদেবীর আরাধনা করলে বিশেষ ফল লাভ করা যায়।
কথায় আছে তিন বার মুখে গঙ্গা নাম নিলেই দেহ শুদ্ধ হয়ে যায়। শাস্ত্র অনুযায়ী কলিযুগে যদি কোনও তীর্থ থাকে সেটা হল গঙ্গা। গঙ্গা পুজো করা অত্যন্ত পুণ্য এবং কল্যাণকর কাজ। গঙ্গা দশহরার দিন উপবাস থেকে গঙ্গা পুজো করা অত্যন্ত পুণ্য এবং শুভ কাজ। দশহরা কথার অর্থ হল ‘দশ পাপ হরা’ বা দশটি পাপ হরণ করা। কী সেই দশবিধ পাপ ?
• দশবিধ পাপ অর্থাৎ পরের জিনিস হরণ, হিংসা, অযথা প্রাণী হত্যা, অবৈধ প্রণয় এগুলিকে বলা হয়েছে দেহগত পাপ।
• পরের নিন্দা, অহঙ্কার, মিথ্যা কথা বলা এবং ভুল কথা বলা এই চারটি বাক্যগত পাপ।
• পরের অনিষ্ট চিন্তা করা, পরের জিনিস কামনা করা এবং মিথ্যার প্রতি আসক্তি এই তিনটি মানসিক পাপ।
মানুষ জেনে না জেনে বা নিজের অজান্তেই হোক এই পাপ কর্মগুলো করে চলেছে। তবে এ কথাও ঠিক যে শুভ কর্মে অশুভের বিনাশ এবং পুণ্যকর্মে পাপের ক্ষয় হয়। মনে করা হয় দশহরার দিন পুজো অর্চনা বা কিছু নিয়ম পালনের মাধ্যমে দশজন্মের পাপ এবং এ জন্মের করা দশটি পাপ ক্ষয় হয়।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুযায়ী:
দশমী তিথি আরম্ভ–
৪ জুন, বুধবার
সময়– রাত ১১টা ৫৬ মিনিট।
দশমী তিথি শেষ–
৫ জুন, বৃহস্পতিবার।
সময়– রাত ২টো ১৭ মিনিট।
শ্রীশ্রী গঙ্গা দশহরা, শ্রীশ্রী গঙ্গাপূজা, শ্রীশ্রী মনসাপূজা, দশমী তিথি মধ্যে গঙ্গাস্নানে দশবিধ পাপক্ষয়।