Warning: Constant SEO_LINKS_API_ENDPOINT already defined in /home/serveque/ramakrishnamathmission.com/serveque/2024/wp-content/plugins/wordpress-plugin/wordpress-plugin.php on line 10
মা কালীকে কেন শাস্ত্রে দিগম্বরী বা বিবসনা হিসাবে কল্পনা করা হয়েছে? কেন তাঁর পোশাকের কথা বলা হয়নি কোথাও? – Ramakrishna Vedanta Math
মা কালী
মা কালীকে কেন শাস্ত্রে দিগম্বরী বা বিবসনা হিসাবে কল্পনা করা হয়েছে? কেন তাঁর পোশাকের কথা বলা হয়নি কোথাও?

▪️হিন্দুধর্মে প্রায় সব দেবদেবীই বস্ত্র এবং অলংকারে সজ্জিত। তাঁদের কার কী পোশাক হবে, তা নিয়েও রয়েছে নানা তত্ত্ব। একমাত্র ব্যতিক্রম মা কালী। কিন্তু কেন তাঁর গায়ে কোনও পোশাক নেই? কেন তিনি দিগম্বরী? কেন তিনি বিবসনা? সাধকের গানে বার বার বলা হয়েছে, ‘বসন পরো মা’। কিন্তু তা সে ভক্ত যতই দেবীর কাছে এমন প্রার্থনার করুন না কেন, শাস্ত্র কিন্তু অন্য কথাই বলছে। সেখানে বলা হয়েছে, মায়ের গায়ে কোনও পোশাক থাকবে না। এর কারণ কী? কোন কাহিনি রয়েছে এর পিছনে?

▪️‘কাল’ শব্দ থেকে ‘কালী’ শব্দের উৎপত্তি। কালের অর্থ সময়। যিনি কালদর্শী তিনিই কালী। অর্থাৎ তিনি অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ— সবই দেখতে পান, সবই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তিনিই কালী। তাঁর ত্রিনয়ন। সেই তিন নেত্র দিয়ে তিনি তিন লোক, তিন কাল দর্শন করেন। এই তিন চোখেই তিনি সত্য, শিব এবং সুন্দরকেও দেখতে পান। আর এই ক্ষমতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে মা কালীর বিবসনা হওয়ার ব্যাখ্যা।

▪️পুরাণে মা কালীর যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তাতে তাঁর চার হাত। সেই চার হাতে রয়েছে খড়্গ, অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বরদান ও অভয়মুদ্রা। মায়ের গলায় নরমুণ্ডমালা। তাঁরবিরাট জিভ। কালো গায়ের রং। তিনি ভগবান শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কালী হলেন শক্তির প্রতীক। আর এই কারণেই নাকি তিনি নগ্নিকা।

▪️কী বলছে শাস্ত্র? কেন তিনি বস্ত্র পরিহিতা নন? শাস্ত্র মতে, দেবী এতটাই শক্তিধর, তাঁকে ধারণ করার মতো পোশাক কোথায়? পোশাক বা বসন হল এমন এক জিনিস, যা কোনও কিছুর আচ্ছাদন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যার আচ্ছাদন হতে হবে, তাকে ঢেকে রাখার মতো ক্ষমতা থাকতে হবে পোশাকের। কিন্তু যিনি সর্বশক্তিমান, যিনি নিজে সব কিছুকে ধারণ করেছেন, যিনি নিজেই প্রকৃতি, তাকে ঢাকতে পারে কোন উপাদান? আর তাই তিনি নগ্নিকা, বিবসনা।
শাস্ত্র মতে, দেবীর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে অনন্ত রূপে। একদিকে তিনি বিনাশাকারী, অন্যদিকে সৃষ্টিকারী। তিনি অসীম। তিনি ভক্তদের রক্ষা করেন, তাঁদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন, আবার তিনি দুষ্টের দমন করেন। এহেন মা সব কিছুর ঊর্ধ্বে। তাই তাঁকে ধারণ করার মতো কোনও উপাদান প্রকৃতির কাছে নেই। সেই কারণেই তাঁকে বিবসনা হিসাবে কল্পনা করা হয়েছে।