কলকাতা: বেলুড় মঠের সেক্রেটারি মহারাজ সুবীরানন্দ জি সম্প্রতি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিবাদের প্রয়োজনীয়তা এবং তার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “ভারতবর্ষের মাটি, যা মুনি-ঋষিদের দেশ, এটি বিবেকানন্দ এবং রামকৃষ্ণদেবের ভারত। এখানে প্রতিটি ধূলিকণা পবিত্র।” পাকিস্তানের বর্বরতা ও সীমান্তের ওপারে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদে তিনি এক সুস্পষ্ট বার্তা দেন। তার মতে, যেসব দেশ ভারতকে আঘাত করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ করা ভারতের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক দায়িত্ব।
মহারাজের বক্তব্যের মূল বিষয় হলো ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যে সামরিক এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা কেবলমাত্র দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নয়, বরং ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ রক্ষার একটি প্রয়াস। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভারতবর্ষের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আসছে এবং তার প্রতিবাদ না করা বড় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মহারাজ। তার ভাষায়, পাকিস্তানের একের পর এক আক্রমণ শুধু ভারতের নিরাপত্তাকেই বিপদগ্রস্ত করছে না, বরং ভারতের গভীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বিশ্বজনীন মূল্যবোধকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
এখানে মহারাজ শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখেননি, বরং দেশবাসীর কাছে একটি বৃহত্তর জাতীয় সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তার বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় জনগণের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছাতে চান—এটি শুধু সরকারের লড়াই নয়, বরং দেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। তার মতে, “ভারত সরকার যে পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করছে, তা দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং সভ্যতার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা প্রদান করছে।”
বেলুড় মঠে ICAR (অন্তস্থলীয় মৎস্য গবেষণা সংস্থা)-এর অনুষ্ঠানে তিনি ভারতের সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান এবং জনগণকে বললেন, “এই পদক্ষেপে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সমর্থন করতে হবে।” এটি শুধু একটি সামরিক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি দেশের সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাসেরও অংশ। ভারতের সংবিধান, ইতিহাস, এবং ধর্মীয় মূল্যের প্রতি সম্মান জানানো এই প্রতিবাদকে আরো অর্থবহ করে তোলে।
তবে, মহারাজের বক্তব্যের মধ্যে যে “সভ্যতার প্রত্যাঘাত” শব্দটি এসেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর প্রতিক্রিয়া কেবল সামরিক শক্তি নয়, বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক ও মানসিক প্রতিরোধও। ভারতের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ, যা অহিংসা, সহিষ্ণুতা, এবং শান্তির পথে চলার জন্য বিখ্যাত, তার প্রতিরোধের মুখে একটি জাতীয় ঐক্যের বার্তা হয়ে উঠেছে।
এখানে বিশ্লেষণযোগ্য দিক হলো, মহারাজের বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি যে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন, তা দেশের প্রতিটি স্তরের মানুষকে একত্রিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। তার মতে, পাকিস্তানের বর্বরতার বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধ কেবল সামরিক নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রতীকও হয়ে উঠতে পারে, যা ভবিষ্যতে ভারতের নিরাপত্তা ও ঐতিহ্য রক্ষায় সহায়ক হবে।